২ লাখ ২৭২১ কোটি টাকার এডিপির খসড়া চূড়ান্ত

Post Iamge

Advertise

আগামী অর্থবছরের (২০১৯-২০) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। আকার দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা।

এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা খাতে ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।

চলতি অর্থবছর মূল এডিপিতে বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা। তবে সংশোধিত এডিপিতে তা কমিয়ে করা হয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার কোটি টাকা।

সংশোধিত এডিপির তুলনায় নতুন এডিপিতে বাড়বে ২১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। পদ্মা সেতু ও পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগসহ গুরুত্ব বিবেচনায় এবার সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে পরিবহন খাত।

মন্ত্রণালয় হিসেবে সর্বোচ্চ ২৯ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। বুধবার পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভায় এ খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় খসড়া

উপস্থাপন করা হয় কার্যক্রম বিভাগের পক্ষ থেকে। বিস্তারিত আলোচনার পর এটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। সভায় পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. নূরুল আমিন, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম, কমিশনের সদস্য শামীমা নার্গিসসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, আমরা এডিপির সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যেই অনেক হয়েছে যেগুলো এখনও হিসাবে আসেনি। আশা করছি, সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নে অসম্ভব বিশ্বাসী। আগামী অর্থবছরেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। নতুন এডিপিতে মানবসম্পদ উন্নয়ন, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, এবং পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এডিপি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আগামীতে চমকপ্রদ খবর পাবেন।

ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা সচিব নুরুল আমিন খসড়া প্রস্তাবটি তুলে ধরেন। এক সপ্তাহের মধ্যে এনইসির সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছর ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (আরএডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ৫৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এ সময়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো ব্যয় করতে পেরেছে ৯৬ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল ৫২ দশমিক ৪২ শতাংশ। টাকার অঙ্কে ৮২ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা।

এডিপিতে মোট প্রকল্প থাকছে ১ হাজার ৪৫১টি। এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প ১ হাজার ২২৭টি, কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ১১৭টি, জেডিসিএফ অর্থায়ন প্রকল্প রয়েছে ২টি এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের প্রকল্প আছে ১০৫টি। এসব প্রকল্প বরাদ্দসহ এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরে মূল এডিপির তুলনায় নতুন অর্থবছরে এডিপির আকার বাড়ছে ১৭ দশমিক ১৮ শতাংশ। খাতভিত্তিক বরাদ্দের খসড়ায় সর্বোচ্চ বরাদ্দ ধরা হয়েছে পরিবহন খাতে।

এ ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পদ্মা সেতু ও পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনায় পরিবহন খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ৫২ হাজার ৮০৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, যা মোট এডিপির ২৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।

এ ছাড়া অগ্রাধিকার খাত বিবেচনায় বিদ্যুৎ খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৬ হাজার ১৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা, যা মোট এডিপির ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন খাতে তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা, যা মোট এডিপির ১২ শতাংশ।

মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে, স্থানীয় সরকার বিভাগ ২৯ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ ২৬ হাজার ১৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। তৃতীয় অবস্থানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ২৫ হাজার ১৬৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।

এ ছাড়া পর্যায়ক্রমে বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রথম ১০ নম্বরে থাকা মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হচ্ছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১৫ হাজার ৯০৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, রেলপথ মন্ত্রণালয় ১২ হাজার ৫৯৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ৯ হাজার ৯৩৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ৯ হাজার ২৭০ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ ৮ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা, সেতু বিভাগ ৮ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৬ হাজার ২৫৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা খসড়া বরাদ্দ ধরা হয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

Add Comment

অন্যান্য সংবাদ