সেই রাহী পেলেন পাঁচ উইকেট

‘বিশ্বকাপ দলে রাহীর পরিবর্তে তাসকিন’- কিছুদিন আগে এমন শিরোনামে খবর বেরোয় গণমাধ্যমে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচকও তাসকিনের দলে ঢোকার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেননি। এরপর শোনা গেল, আবু জায়েদ রাহী শারীরিকভাবে ফিট নন। যদিও পরদিনই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের তৃতীয় ম্যাচে অভিষেক হলো তার। নিজের প্রথম ম্যাচে উইকেট পেলেন না। তবে গতকাল ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচে যা দেখালেন ডানহাতি এ পেসার, তাতে এখন রাহী বাদ দিতে গেলে পুনরায় ভাবতে হবে নির্বাচকদের। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নিয়মরক্ষার ম্যাচে ৯ ওভারে ৫৮ রানে রাহী নিয়েছে ৫ উইকেট! এমন একজনকেই তো বিশ্বকাপে দেখতে চায় বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে চমক হিসেবে ছিলেন রাহী। তবে তাকে নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয়নি। বরং তাসকিনের বাদ পড়াটাই ছিল সবার মুখে মুখে। বিষয়টা স্বাভাবিক। তাসকিনের বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। রাহী কেবল জাতীয় দলের পাঠ শুরু করেছেন। বিশ্বকাপ দল ঘোষণার সময় তিনি ওয়ানডেতে অনিভিষিক্ত। তবে বিসিবির উর্ধ্বতন কর্তারা তখন বলেছিলেন, রাহীর বলে সুইং আছে। তাই তাকে নেয়া হয়েছে। সত্যিই আছে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেই দেখা গেছে রাহীর সামর্থ্য। যদিও নিজের ষষ্ঠ ওভার পর্যন্ত ছিলেন উইকেটশূন্য। অ্যান্ডি বালবির্নিকে আউট করে সেই শূন্যতা কাটান। পান ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম উইকেটের দেখা।
আগের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৩৫ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন বালবির্নি। এবারও ভয়ংকর হয়ে উঠার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। কিন্তু রাহী তাকে থামিয়ে দেন ২০ রানেই। বালবির্নির ক্যাচটি উইকেটের পেছনে লুফে নেন মুশফিকুর রহীম।
অবশ্য লেগ সাইড দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলটি বালবির্নির ব্যাটে লেগেছে কিনা, নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আবেদনে আম্পায়ার আঙুল তুলে দেন। ডিআরএস না থাকায় সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারেননি বালবির্নি।
রাহীর দ্বিতীয় উইকেটটিতেও কিছুটা ভাগ্যের ছোঁয়া ছিল। অফসাইডে ফুলটস হয়ে যাওয়া বলে ব্যাট চালান উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড। দৌড়ে এসে বাউন্ডারিতে দারুণ ক্যাচ লুফেন লিটন দাস। মাত্র ৬ রানের জন্য সেঞ্চুরিবঞ্চিত হয় পোর্টারফিল্ড। পরের ওভারে আরো ভয়ংকররূপে দেখা যায় রাহীকে। টানা দুই বলে কেভিন ও’ব্রায়েন (৩) আর দুবার জীবন পেয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি পাওয়া পল স্টার্লিংকে (১৩০) সাজঘরের ফেরান রাহী। ফিফটির পর টানা দুই বলে দুই ক্যাচ উঠিয়েছিলেন স্টার্লিং। সাব্বির রহমান আর সাইফুদ্দিনের হাত ফসকে বেরিয়ে যায় তা। পরে তিনিই টানেন আয়ারল্যান্ডকে। তবে রাহীর কল্যাণে আয়ারল্যান্ডকে ৩০০ রানের আগেই বেঁধে ফেলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। পোটারফিল্ডকে তুলে নেয়ার পর চড়াও হয়ে খেলতে থাকা গ্যারি উইলসনকেও ফেরান এ পেসার। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ২৯২ রান সংগ্রহ করে আয়ারল্যান্ড। প্রথমবার একাদশে সুযোগ পেয়ে মন্দ করেননি রুবেল হোসেনও। আয়ারল্যান্ড শিবিরে প্রথম আঘাতটা হানেন তিনিই। ৭ ওভারে ২ মেডেনে ৪১ রানে ১ উইকেট নেন রুবেল। পেস অলরাউন্ডার সাইফুদ্দিনও দারুণ ইকোনমি রেটে বোলিং করেছেন। ৯ ওভারে ৪৩ রানে তার শিকার ২ উইকেট। রুবেলের মতো প্রথমবার ত্রিদেশীয় সিরিজে সুযোগ পাওয়া মোসাদ্দেক হোসেন উইকেট না পেলেও প্রতিপক্ষের রানের চাকা আটকে রেখেছিলেন। ৮ ওভারে তিনি দেন ৩২ রান। তাদের তুলনায় ক্যাচ মিসের কারণে ‘দুর্ভাগা’ সাকিব একটু বেশি রান খরচ করেছেন। ৯ ওভারে ৬৫ রান। আর অধিনায়ক মাশরাফি দিয়েছেন ৮ ওভারে ৪৭ রান।
Add Comment