রোজার শুরুতেই জমজমাট ঈদের কেনাকাটা

যানজট ও ভিড় থেকে রেহাই পেতে রাজধানীবাসী রোজার শুরুতেই ঈদের কেনাকাটা শুরু করেছেন। প্রতিদিনই এ ভিড় বাড়ছে।
ক্রেতার পদচারণায় মুখর হয়ে উঠছে রাজধানীর শপিংমলগুলো। তাই দেশীয় ফ্যাশন হাউস ও নামিদামি ব্র্যান্ডগুলো ঈদ কালেকশন বাজারে আনতে শুরু করেছে।
শুক্রবার দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ মার্কেট যমুনা ফিউচার পার্ক ঘুরে দেখা গেছে, বিকাল থেকে গাড়ির সারি যমুনা ফিউচার পার্কে প্রবেশ করছে।
ইফতারের পর ভিড় আরও বাড়ে। রাজধানী ছাড়াও আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা ঈদের আগাম কেনাকাটা করতে আসেন। আর ফ্যাশন হাউসগুলোর বিক্রয় কর্মীরা ঈদ পোশাক সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
অনেক দোকানে আমদানি করা পোশাক ডিসপ্লে করা হচ্ছে। ব্র্যান্ডের শো-রুমগুলো এবার রাজেশ মালহোত্রা, মনিশ মালহোত্রা, সঙ্গীতা শিবরানী ও সত্যপালের মতো ভারতীয় বিখ্যাত ডিজাইনারদের ডিজাইন করা পোশাক এনেছে।
এসবের প্রতিটি শাড়ি, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গায় রয়েছে নতুনত্ব। আর পুরুষদের শেরোয়ানি টাইপ পাঞ্জাবি, কুর্তায় রয়েছে রাজকীয় ছোঁয়া। পাশাপাশি মনেরেখ, নীল আঁচল, হায়া, মান্যবর থেকে শুরু করে বিভিন্ন দোকানে ভারতীয় তন্তুজ, ঢাকাইয়া জামদানি, ভাগলপুরের সিল্ক, পার্টি শাড়ি, দিল্লি কটন, বোম্বে ডিজাইনের শাড়ি, দিল্লির লেহেঙ্গা, সারারা লেহেঙ্গা এনেছে। সপরিবারে বাড্ডা থেকে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা গৃহিণী হুমায়রা আক্তার বলেন, রোজার শেষ দিকে যানজট ও প্রচুর ভিড় থাকে।
ওই সময় মার্কেটে কেনাকাটা করা যায় না। পোশাকের দর-দামও তুলনামূলক বেশি থাকে। তাই এবার আগেভাগেই কেনাকাটা করা শুরু করেছি। তিনি আরও বলেন, বাচ্চাদের ঈদ কেনাকাটা দিয়ে শুরু করেছি।
পর্যায়ক্রমে পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করব। যমুনা ফিউচার পার্কে কেনাকাটা করতে আসা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ শপিংমলটি আয়তনে বড়, প্রচুর খোলামেলা জায়গা আছে। ধাক্কা-ধাক্কি, হুড়োহুড়ি ছাড়া স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করা যায়।
আরেকটা বিষয় হল- এখানে দেশীয় সব ফ্যাশন হাউসের পাশাপাশি বিদেশি ব্র্যান্ডের শো-রুম আছে। তাই পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করতে এদিক-ওদিক ছুটতে হয় না।
কয়েকজন শোরুম ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার ঈদের আগাম বেচাবিক্রি বেশ ভালো। অন্যবার যেখানে ১৫ রোজার পর থেকে রাজধানীবাসী মার্কেটমুখী হন, সেখানে এবার রোজার প্রথম থেকেই বেচাবিক্রি শুরু হয়েছে।
তাই তাড়াহুড়া করে ঈদ পোশাক আনা হয়েছে। মধ্য রোজা পর্যন্ত ভারত থেকে বিমানে পোশাক আমদানি করা হবে। আর দেশীয় ফ্যাশন হাউস যেমন- আড়ং, অঞ্জনস, কে ক্রাফট, জেন্টাল পার্ক, এক্সটাসি, ইসি, রিচ ম্যান, লুবনান প্রতিদিনই নতুন ডিজাইনের পোশাক আনছে। এছাড়া অনেক শোরুমে আমদানি করা পোশাক ডিসপ্লের কাজ করতে দেখা গেছে।
প্যারিস গ্যালারির ম্যানেজার মোজাম্মেল হক বলেন, এবার আগেভাগেই ঈদ কেনাকাটা শুরু করেছেন রাজধানীবাসী। ঠিকমতো আমদানি করা পোশাক ডিসপ্লে করার মতো সময়ও পাওয়া যায়নি। ধীরে ধীরে পোশাক ডিসপ্লে করা হচ্ছে। রোজার ঈদের এক সপ্তাহ আগপর্যন্ত পোশাক আমদানি অব্যাহত থাকবে। তিনি আরও বলেন, এবার যথেষ্ট ক্রেতা আছে। মানুষের মধ্যে কেনাকাটার আগ্রহ আছে। গতবারের চেয়ে এবার বিক্রি ভালো হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে বিক্রি আরও বাড়বে।
Add Comment