ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি দূর হয়েছে

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, নতুন ভ্যাট আইনে কোনো পণ্যের ওপর ভ্যাট ও কর হার বাড়বে না। আইনটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কোনো হয়রানি ও কষ্ট দেয়া হবে না।
১ জুলাই থেকে এ আইন বাস্তবায়নের পর কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দিলে ফের আইন সংশোধন করা হবে। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছে, তা দূর হয়ে গেছে। এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর মঙ্গলবার সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের
(এনবিআর) সঙ্গে ব্যবসায়ীদের যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়, মূলত তা দূর করতেই অর্থমন্ত্রীর শেরেবাংলা নগরের দফতরে এ বৈঠক ডাকা হয়।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, ভ্যাট আইন নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল বলে আমি বুঝতে পারি। ব্যবসায়ীরা ভ্যাট আইনে যা চেয়েছিলেন, সবকিছু অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের একটি কথা ছিল, আমরা আইনটি চূড়ান্ত করার পর তাদের দেখার একটা সুযোগ দেয়া। টেকনিক্যাল কারণে আমরা সেটা করতে পারিনি। এটি এমন একটি আইন, যা বাজেট পাস হওয়ার আগে দেখানো সম্ভব নয়। বেআইনি হবে বিধায় সে কাজটি করতে পারিনি। এছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্য থেকে এ কাজটি করা হয়নি।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সহযোগিতা না থাকলে শেষ সময় তারা হতাশায় পড়বেন। আমরা তাদের সহযোগিতা বেশি চাই। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ভ্যাট আইন পুরোপুরি বাস্তবায়নে আমরা প্রস্তুত নই। এটি বাস্তবায়ন করতে অনেক সময় লাগবে। এটি চলমান থাকবে। এটি একদিনে শেষ করা যাবে না।
তবে কোনো ধরনের হয়রানি এবং কাউকে কষ্ট দিয়ে এ আইন বাস্তবায়ন করা হবে না। আইনটি কার্যকর করতে একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, নতুন ভ্যাট আইনে কোনো পণ্যের ওপর ভ্যাট ও কর বাড়বে না। বরং কমতে পারে। এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন বলেন, মন্ত্রী আমাদের যে আশ্বাস দিয়েছেন, আমরা সেটার ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে চাই। দেশটা আমাদের সবার। দেশের উন্নয়নে আমরা অর্থমন্ত্রীর পাশে আছি। উনি আমাদের বলেছেন, কোনো পণ্যে ট্যাক্স বৃদ্ধি পাবে না।
তবে ট্যাক্সের আওতা আরও বাড়বে। ভ্যাটের কারণে পণ্যের দাম বাড়ুক, এটা অর্থমন্ত্রীও চান না। তিনি আরও বলেন, নির্ধারিত কোনো সেক্টরে বা কোনো পণ্যে কোনো অসুবিধা হয়- সেটি নিশ্চয় ওনারা বিবেচনায় নেবেন। আমরা যথেষ্ট আস্থা রেখেছি। এর আগে প্রধান উদ্বেগের জায়গা ছিল কোন পণ্যে কত রেট হবে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা মন্ত্রী পরিষ্কারভাবে বলেছেন, ওটা বাজেটের আগে যদি বলে দেন, তাহলে অসুবিধা হবে।
আপনাদের ওটা বিবেচনায় নিতে হবে। এফবিসিসিআই তো দীর্ঘদিন ধরে বাজেট প্রণয়ের সঙ্গে জড়িত, তাহলে আপনারা এমন দাবি কেন জানিয়েছিলেন যে, আপনাদের সব দেখিয়েই করতে হবে- এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে এফবিসিসিআইয়ের এক প্রতিনিধি প্রশ্নকারীর পরিচয় জানতে চান। পরিচয় দেয়ার পর তিনি বলেন, আপনাকে তো এর উত্তর মন্ত্রী মহোদয় বলেই দিয়েছেন। আপনি এভাবে বলতে পারেন না।
তখন ওই সংবাদকর্মী বলেন, আমরা তো প্রশ্ন করতেই পারি। পরে অর্থমন্ত্রীর মধ্যস্থতায় বিষয়টি সুরাহা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে কোনো সমস্যা থাকলে তা পরবর্তী সময়ে পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে। নির্দিষ্ট সময়ে ভ্যাট আইনটি বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের নবনির্বাচিত সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।
Add Comment