বিশ্বকাপেও ভালো ফল পাবো

মুশফিকুর রহীমের পর যখন মোহাম্মদ মিঠুনও আউট হলেন, ড্রেসিং রুমে অনেকের মাথা নুইয়ে এসেছিল হতাশায়। মাশরাফি বিন মুর্তজা উঠে দাঁড়ালেন হঠাৎ। নতুন ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেনের কাছে গিয়ে পিঠ চাপড়ে দিয়ে কী যেন বললেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফাইনাল শেষে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক মোসাদ্দেকের মনে আছে অধিনায়কের সেই কথা। মোসাদ্দেক যখন উইকেটে গেলেন, জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৫০ বলে ৬৭ রান। এই সময়ের ক্রিকেটে এমন কঠিন কিছু নয়। তবে উইকেট পড়ে গিয়েছিল ৫টি। মাহমুদুল্লাহ ও মোসাদ্দেক, উইকেটে থাকা এই দুজনই ছিলেন স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের শেষ জুটি। এরপর ব্যাটিংয়ের অপেক্ষায় ছিলেন বোলিং অলরাউন্ডাররা। কিন্তু আর কারও প্রয়োজন পড়েনি। মোসাদ্দেকের ২৪ বলে ৫২ রানের হার না মানা অসাধারণ ইনিংসে জয় ধরা দেয় ৭ বল বাকি থাকতেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। দলকে জিতিয়ে যখন ফিরছেন, মোসাদ্দেককে আবার পিঠ চাপড়ে দিলেন মাশরাফি। পরে সংবাদমাধ্যমকে মোসাদ্দেক জানান অধিনায়কের কাছ থেকে পাওয়া প্রেরণার কথা। মোসাদ্দেক বলেন, ‘উইকেটে যাওয়ার আগে মাশরাফি ভাই বলছিলেন, সৈকত তুই পারবি। যা ইচ্ছা খেল, শেষ করে আয়। মোসাদ্দেক বলেন, ‘ব্যাটিংয়ে যাওয়ার পর আমার একটি ব্যাপারই কাজ করছিল যে ইতিবাচক ক্রিকেট খেলব। এমন একটা পরিস্থিতি ছিল যে খুব সহজ ছিল না। আমি চেষ্টা করেছি বল বুঝে খেলতে। আমরা যখন ফিল্ডিং করে ফিরেছি, তখন মাশরাফি ভাই থেকে শুরু করে মুশফিক ভাই, তামিম ভাই, রিয়াদ ভাই, সবাই একটা কথা বলছিলেন যে, আমাদের যে ব্যাটিং সামর্থ্য আছে এবং পুরো টুর্নামেন্টে যেমন খেলেছি, আমাদের পক্ষে এই রান তাড়া করা সম্ভব।’
ফাইনালে ২০ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন মোসাদ্দেক। ওয়ানডেতে বাংলাদেশি কোনো ব্যাটসম্যানের দ্রুততম অর্ধশতক এটি। এর আগে ২০১৩ সালে বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আবদুর রাজ্জাক এবং ২০০৫-এ নটিংহ্যামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২১ বলে অর্ধশতক হাঁকান মোহাম্মদ আশরাফুল। ডাবলিনে ২৪ ওভারে ২১০ রানের টার্গেটে ইনিংসের ২২তম ওভারে ২৫ রান নেন মোসাদ্দেক। ক্যারিবীয় স্পিনার ফ্যাবিয়ান অ্যালেনের ওই ওভারে মোসাদ্দেক হাঁকান তিনটি ছক্কা ও একটি বাউন্ডারি। মোসাদ্দেক বলেন, ওই ওভারে যখন একটা ছক্কা হলো, মনে হলো এ ওভারে রান যতটা এগিয়ে নেয়া যায়। ৩ ওভারে ২৭ রান দরকার ছিল। ওই ওভারটা আমরা টার্গেট করেছিলাম, রানটা এগিয়ে রাখব।’ ২৬ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি মোসাদ্দেকের দ্বিতীয় ফিফটি। এতে ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়ও তিনি। মোসাদ্দেক বলেন, এটা অনেক ভালো লাগার বিষয়, প্রথম একটা কাপ জিতেছি। সেটাও আবার বিদেশের মাটিতে, ভালো একটা দলের বিপক্ষে। সবচেয়ে বড় কথা, বিশ্বকাপের আগে ভালো একটা প্রস্তুতি হলো। ব্যাটিং, বোলিংয়ে এখানে যেভাবে ভালো খেলেছি, এভাবে খেলতে পারলে বিশ্বকাপে আশা করি ভালো একটা ফল পাব। বিশ্বকাপে উইকেট আরও ভালো হবে।
Add Comment