বিতর্কিত ব্যবসায়ী মামুনের আরও ৭ বছরের দণ্ড

অর্থ পাচার মামলায় আদালত বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের ৭ বছর কারাদণ্ড ও ১২ কোটি টাকা জরিমানা করেছেন। বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। মামুন এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে জেলে পাঠানো হয়।
রায়ে লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকে মামুনের হিসাবে থাকা মানি লন্ডারিংয়ের ৪ লাখ ১৮ হাজার ৮৫৩ দশমিক ৪৭ পাউন্ড স্টার্লিং (৬ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকা) রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাজেয়াপ্তের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিতকরণসহ বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির তফসিলসহ সব বিবরণ সরকারি গেজেটে প্রকাশের নির্দেশও দেয়া হয়েছে। ওই টাকা লন্ডন থেকে বাংলাদেশে ফেরত আনার বিষয়ে আইন প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রায়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, আদালত মানি লন্ডারিং আইন ২০০২ এর ১৩(২) ধারা অনুযায়ী আদালত সর্বোচ্চ দণ্ড দিয়েছেন। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আদালতে উপস্থিত ছিলেন জাহেদুল ইসলাম কোয়েল, হেলাল উদ্দিন, আকবার হোসেন জুয়েল প্রমুখ আইনজীবী। তারা জানান, মামুন সুবিচার পাননি। রায়ে তারা সংক্ষুব্ধ। আদেশের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে যাবেন।
আইনজীবী জাহেদুল ইসলাম বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৩০ জানুয়ারি যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং, কর ফাঁকিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০টিরও বেশি মামলা হয়। এর আগে ২০১৩ সালে আরেকটি মামলায় তার ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়। এরও আগে অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ বছর কারাদণ্ড হয়েছে, যা পরে হাইকোর্ট বাতিল করে দেন। এছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জনের এক মামলায়ও তিনি ১০ বছরের দণ্ডে দণ্ডিত হন।
সূত্র জানায়, বিটিএল ও গ্লোবাল ফার্মাসিউটিক্যালের চেয়ারম্যান এম শাহজাদ আলী রেলওয়ের সিগন্যালিং আধুনিকীকরণের টেন্ডার পান। কিন্তু কার্যাদেশ চূড়ান্ত করার সময় মামুন তার কাছে অবৈধভাবে কমিশন দাবি করেন। তা না হলে কার্যাদেশ বাতিল করার হুমকি দেন। পরে ২০০৩ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে মামুন কমিশন বাবদ ৬ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকা গ্রহণ করেন।
পরে তিনি তা বাংলাদেশ থেকে লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকে পাচার করেন। ওই অভিযোগে ২০১১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করে দুদক। পরের বছর ২৬ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয়। সর্বশেষ ৮ এপ্রিল যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেন।
Add Comment