ফেনীর এসপি প্রত্যাহার

নুসরাত জাহান রাফি (১৮)কে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে ফেনীর পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল বিকালে পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. সোহেল রানা মানবজমিনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রোববার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যাহার সংক্রান্ত আদেশও জারি করা হয়েছে। নুসরাত হত্যার ঘটনায় ফেনীর পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারসহ চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির প্রমাণ পায় পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্ত কমিটি। কমিটির প্রধান ডিআইজি এস এম রুহুল আমিন গত ৩০শে এপ্রিল রাতে পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এতে পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকার, সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন, এসআই (নিরস্ত্র) মো. ইউসুফ ও এসআই (নিরস্ত্র) মো. ইকবাল আহাম্মদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়।
তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, অভিযুক্ত এসআই মো. ইউসুফকে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয় এবং এসআই মো. ইকবাল আহাম্মদকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় সংযুক্ত করা হয়। সবশেষ গতকাল বিকালে ফেনীর এসপি জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, নিহত নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাতকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭শে মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেয়া হচ্ছিল। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিমের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এসময় তাকে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে যায় অধ্যক্ষের ভাগ্নি পপি। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়া হয়। এ ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ার জোরালো অভিযোগ ওঠে। ১০ই এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত।
Add Comment