ফণীর পর বন্যা আতঙ্কে তিস্তাপারের ১০ লাখ মানুষ

Post Iamge

Advertise

ফণীর প্রভাবে ভারত ও বাংলাদেশের নদ-নদীতে গত দুই দিনে পানি কিছুটা বেড়েছে। এখন ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবের আশংকা শেষ হলেও অকাল বন্যার শংকা করছেন দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে ভারি বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীবেষ্টিত রংপুর অঞ্চলের মানুষরা শুনছেন বন্যার আগাম পদধ্বনি।

ফণীর পর তিস্তার দুপারের ১০ লাখ মানুষের চোখেমুখে এখন বন্যা আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা বলছেন, ভারত গজলডোবার বাঁধের সব গেট খুলে দিলে হু হু করে নদ-নদীতে পানি বাড়বে। এতে পানি তিস্তার দু’কূল ছাপিয়ে অকাল বন্যা হতে পারে।

লালমনিরহাটের হাতিবান্ধার উপজেলার বড়খাতার বাসিন্দা শিক্ষক নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, হঠাৎ করেই তিস্তায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। এ অবস্থায় গজলডোবা থেকে যদি পানি ছেড়ে দেয়া হয়, তা হলে নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে আবাদি ফসলসহ ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে।

বন্যার আশংকায় ডালিয়া ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে। কমিয়ে রাখা হয়েছে ডালিয়ার মূল ক্যানেলের পানি। পরিস্থিতি সামাল দিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে নেয়া হয়েছে আগাম প্রস্তুতিও।

বরাবরই ভারত গজলডোবার বাঁধের গেট খুলে দেয়ায় এ অঞ্চলে আগাম বন্যা হয়ে থাকে বলে জানান রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিমাপক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ফণী মোকাবেলায় আমরা যেমন প্রস্তুত ছিলাম। তেমনি ভারতের গজলডোবা থেকে যদি পানি ছেড়ে দেয়, সেক্ষেত্রে আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। বর্তমানে ডালিয়া ব্যারেজের সব গেট খুলে রেখেছি। এছাড়া মূল ক্যানেলের পানিও কমিয়ে রাখা হয়েছে। যাতে ভারত থেকে আসা পানি দ্রুত সরিয়ে ফেলা যায়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানির প্রবাহ দিনে ছিল ৫১.০৫ সেন্টিমিটার। রাতে ছিল ৫১. ৫২ মিটার। এ পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয় ৫২.৬ সেন্টিমিটার। বর্তমানে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নীচে প্রবাহিত হচ্ছে।

ফণীর প্রভাবে ভারত যদি গজলডোবার বাঁধের সব গেট খুলে দেয় তা হলে তিস্তাপারে ভয়াবহ বন্যার আশংকা রয়েছে। সম্ভাব্য বন্যার হাত থেকে রক্ষা পেতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে রেখেছে। যাতে পানি দ্রুত নদীর ভাটিতে চলে যায়। এছাড়া ব্যারেজের মূল ক্যানেলে পানি কমিয়ে রাখায় ভারত ছাড়লে তা সরবরাহ করে পরিস্থিতি সামাল দেয়া হবে।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারি আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ফণীর প্রভাবে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত রংপুরের বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেছে। এসময় বাতাসে ঘণ্টায় ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার বেগে ছিল। গতকাল রংপুর ও আশপাশের এলাকায় ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ফণীর তাণ্ডব শংকা কেটে যাওয়ায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

Add Comment

অন্যান্য সংবাদ

নিউজলেটার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন

আপনার ইনবক্সে সেরা খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন । আমরা আপনাকে স্প্যাম করব না এবং আমরা আপনার গোপনীয়তাকে সম্মান করি।