ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ

চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা বেশ আলোচিত হলেও তা বন্ধ না হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। এ কাজ করছে মূলত রাতে নেশাগ্রস্ত কেউ আর দিনে শিশু-কিশোররা। শিশু-কিশোররা মূলত খেলার ছলেই এ নির্মম কাজে অংশ নিচ্ছে।
রোবরাব রাতে রাজশাহী থেকে ঢাকা আসার পথে যাত্রী জিশান ট্রেনে নিক্ষেপ করা পাথরের আঘাতে আহত হয়ে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।
মঙ্গলবার যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৪ বছরের শিশু সালমান জাহান জিশান বাবা-মা ও ভাইয়ের সঙ্গে রাজশাহী থেকে ট্রেনে ঢাকায় আসার পথে পাথর নিক্ষেপের শিকার হয়। সিরাজগঞ্জের জামতৈল ও মনসুর আলী স্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে আসার পর জিশান ওই ঘটনার শিকার হয়। রাত সাড়ে ৯টায় আহত অবস্থায় তাকে নিকটবর্তী সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখান থেকে রাত ১০টার দিকে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত দেড়টায় দিকে তার অস্ত্রোপচার হয়। সোমবার দায়িত্বরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, জিশান শঙ্কামুক্ত নয়। জিশান দ্রুত সেরে উঠুক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আর কাউকে যেন এমন নিষ্ঠুরতার শিকার হতে না হয়, আমরা এটাই দেখতে চাই।
বাংলাদেশ রেলওয়ের নিজস্ব জমি এবং এর আশপাশের প্রতি ইঞ্চি জায়গা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের একক প্রচেষ্টায় নজরদারিতে রাখার কাজটি কঠিন। বস্তুত ঢিল ছোড়া হয় পার্শ^বর্তী কোনো জায়গা থেকে।
সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ কাজে অংশগ্রহণ করলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অপরাধীকে সহজে শনাক্ত করতে পারবে। জানা যায়, পাথরের আঘাতে ট্রেনের যে ক্ষতি হয় তা সারাতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের বছরে খরচ হয় কোটি টাকার বেশি অর্থ।
রেললাইনের দু’পাশে কিছু অংশে যে রাতদিন ২৪ ঘণ্টা ১৪৪ ধারা জারি থাকে, তা সবাইকে জানাতে পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ফলে অপরাধীকে কী শাস্তি ভোগ করতে হবে, তাও জনগণকে বিস্তারিত জানাতে পদক্ষেপ নিতে হবে।
অভিভাবক, শিক্ষকসহ এলাকার গণ্যমান্য সবাইকে এ কাজে ভূমিকা রাখতে হবে। শিশু-কিশোরদের জানাতে হবে তাদের কৃত অপকর্মের কারণে মুহূর্তের মধ্যে একজন ব্যক্তি চিরদিনের জন্য অন্ধ হয়ে যেতে পারে অথবা আরও বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। ট্রেনে ইট-পাথর নিক্ষেপ রোধে কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে।
Add Comment