ইরানের চারপাশে শক্তি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের সম্ভাব্য হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ দুর্গ গড়ে তুলছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন। পরমাণু চুক্তি নিয়ে ইরানের সঙ্গে বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে একটি প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাপনা ও যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে।
শুক্রবার মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন ঘাঁটিতে এসব প্রতিরোধ ব্যবস্থা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছেন কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন, ‘উভচর যান ও উড়োজাহজ পরিবহনে সক্ষম ইউএসএস আর্লিংটন শিগগিরই উপসাগরে থাকা অপর যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস আব্রাহাম লিংকনের সঙ্গে যোগ দেবে।’ খবর নিউইয়র্ক টাইমস ও বিবিসির।
যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস আর্লিংটন কবে উপসাগরে পৌঁছাবে তা জানা যায়নি। ইউএসএস আব্রাহাম লিংকন বৃহস্পতিবার সুয়েজ খালের ভেতর দিয়ে অগ্রসর হচ্ছিল বলে জানিয়েছে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড। এরই মধ্যে কাতারের আল উদেইদ মার্কিন ঘাঁটিতে বেশ কয়েকটি বি-৫২ বোমারু বিমান পৌঁছেছে। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন বাহিনীর ওপর ইরানের সম্ভাব্য হামলার হুমকি মোকাবেলায় এসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তেহরানের কাছ থেকে হুমকির মাত্রা সম্পর্কে সুস্পষ্ট কিছু বলেননি মার্কিন কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে ইরান তাদের দিক থেকে হুমকির বিষয়টিকে ‘বাজে কথা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে হস্তক্ষেপের লক্ষ্যে ‘মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ’ চালাতেই ওয়াশিংটন মধ্যপ্রাচ্যে একের পর এক অস্ত্র ?ও যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করছে বলে অভিযোগ তাদের।
ইরানের জ্যেষ্ঠ ধর্মীয় নেতা ইউসুফ তাবাতাবি-নেজাদ হুশিয়ারি দিয়েছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক নৌযান ইরানের কেবল একটি ক্ষেপণাস্ত্রই ধ্বংস করে ফেলতে পারে।’ পেন্টাগন বলেছে, তারা ইরানের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াতে চায় না।
তবে ওয়াশিংটন ওই অঞ্চলে মার্কিন বাহিনী এবং স্বার্থের সুরক্ষায় প্রস্তুত। শুক্রবারের বিবৃতিতে পেন্টাগন বলেছে, ‘ইরানের কার্যক্রমে কড়া নজরদারি অব্যাহত রাখছে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।’ মধ্যপ্রাচ্যে যে প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাপনা মোতায়েন করা হচ্ছে, তা ব্যালাস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং অত্যাধুনিক জঙ্গিবিমানের সম্ভাব্য হামলা মোকাবেলায় বেশ কার্যকর বলেও আশ্বস্ত করেছে পেন্টাগন।
২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের প্রত্যাহার করে নিলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করে। নিজেদের সরিয়ে নেয়ার পাশাপাশি ওয়াশিংটন তেহরানের ওপর আগের সব নিষেধাজ্ঞাও পুনর্বহাল করেছে। ইরানের তেল রফতানি বন্ধে ক্রেতাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে তারা। ইরান বলেছে, তাদের তেল রফতানিতে যুক্তরাষ্ট্র বাধা হয়ে দাঁড়ালে তারাও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেবে। হরমুজ দিয়েই মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ তেলবাহী জাহাজ ইউরোপ ও আমেরিকায় যায়।
Add Comment