আন্দোলন রেখে বিকালে বাসায় ফিরে গেলেন বিরোধীরা

Post Iamge

Advertise

ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করতে নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছেন বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুইদো।

তবে তার সরকারবিরোধী বিক্ষোভগুলোর কোনোটিই ফলপ্রসূ হচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বুধবার ভেনিজুয়েলার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী মিছিলটিও শেষ পর্যন্ত জোরালো হয়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

রয়টার্স জানায়, এদিন রাজধানী কারাকাসে জড়ো হওয়া সরকারবিরোধীদের অনেকে বিকালবেলায় আন্দোলন রেখে বাসায় ফিরে যান।

বেশ কিছু কট্টর সরকারবিরোধী তখনও রাস্তায় অবস্থান করছিলেন, কাঁদুনে গ্যাস ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় ন্যাশনাল গার্ড।

অথচ ভেনিজুয়েলার ‘ইতিহাসে সবচেয়ে বড়’ সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হবে বলে মঙ্গলবার ডাক দিয়েছিলেন হুয়ান গুইদো।

এক টুইটে গুইদো জানিয়েছিলেন, ‘মাদুরোকে হটাতে তার নেয়া পদক্ষেপের এ চূড়ান্ত পর্বে লাখ লাখ ভেনিজুয়েলান রাস্তায় নেমে আসবেন।’

কিন্তু তার নেয়া পদক্ষেপে বুধবারের মিছিলে দেশটিতে রাজনৈতিক পরিবর্তনের জোরালো কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

এদিকে তাকে সমর্থন দিতে বারবারই দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন গুইদো। যদিও সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃবৃন্দ এখন পর্যন্ত মাদুরোর প্রতি অনুগত আছেন।

বারবার ব্যর্থ হওয়া গুইদো বুধবার কারাকাসে জড়ো হওয়া হাজারো সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সরকার যদি মনে করে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে গেছি, তা হলে তারা ভুল ভাবছে। আমাদের এ সরকার পতনের আন্দোলন চলমান। ’

এ সময় সমর্থকদের রাজপথে থাকতে আহ্বান জানান গুইদো।

গভীর অর্থনৈতিক সংকট ও মুদ্রাস্ফীতির পর্যায়ে রয়েছে ভেনিজুয়েলা। গুইদোর পক্ষেও রয়েছে লাখো সমর্থন।

এর পরেও ভেনিজুয়েলার বিরোধী দল প্রায়ই মাদুরোবিরোধী বিশাল বিশাল প্রতিবাদের আয়োজন করেও মাদুরোকে হটাতে পারছে না।

এমন পরিস্থিতিতে রয়টার্সকে কয়েকজন গুইদো সমর্থক জানিয়েছেন, ‘মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে, এটি জেনেই তারা রাজপথে নেমেছেন। সেই প্রস্তুতি তাদের আছে।’

কারাকাসের বাসিন্দা ৫২ বছর বয়সী সেবিকা লায়লা আমেজকিতা বলেন, ‘আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত থাকা উচিত। কিছুই যে হচ্ছে না তা কিন্তু নয়।’

এ বিষয়ে অবশ্যই ধৈর্য ধারণ করতে হবে মন্তব্য করে ওই নারী বলেন, ‘২০ বছরেও অনেকে যা করতে পারেননি গুইদো তা তিন মাসে করে দেখিয়েছেন।’

তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ভেনিজুয়েলায় সশস্ত্র বাহিনীর সমর্থনের পাশাপাশি জনতার বিরাট একটি অংশকে এখনও পাশেই পাচ্ছেন মাদুরো। জনতার অনেকেই এসব প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে যেতে চান না।

এ ছাড়া গুইদোর নিজেকে ‘অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট’ ঘোষণার পর তিন মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় অনেকেই হতাশ হয়েছেন।

তাই এ পর্যায়ে এসে গুইদো এরচেয়ে বেশি আর কী করতে পারবেন সে প্রশ্ন রয়েছে বিশ্লেষকদের।

প্রসঙ্গত গত বছর ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাদুরো পুনর্নির্বাচিত হন। কিন্তু এ নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করে নিজেকে ‘অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট’ ঘোষণা করেছিলেন ভেনিজুয়েলার জাতীয় পরিষদের প্রধান গুইদো।

গুইদোকে ভেনিজুয়েলার বৈধ রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশ। অন্যদিকে রাশিয়া, চীন, কিউবা, তুরস্ক, ইরান মাদুরোকেই বৈধ রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দেখছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

Add Comment

অন্যান্য সংবাদ